RH

৩০ জুলাই ২০১৯

China.



Cinchona- China Officinalis.
সিঙ্কোনা/চায়না হোমিওপ্যাথি ঔষধ

হিপোক্রেটিস কতৃক লিখিত,যে ঔষধ যে ব্যাধি করিতে পারে সেই ঔষধই তাহা নিরাময় করিতে পারে।

হ্যানিম্যান চিকিৎসক ও অনুবাদক। তিনি মেটেরিয়া মেডিকা অনুবাদ করার সময় লক্ষ্য করেন,সুস্থ শরীরে সিঙ্কোণাছাল সেবন করিলে কম্প জ্বর উপস্থিত হয়, আবার সিঙ্কোণাই কম্প জ্বরের প্রধান ঔষধ।
এটিই হ্যানিম্যানের নতুন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আবিষ্কারের মূল সূত্র হইল। তারপর তিনি এই সূত্রে নিজে কতকগুলো ভেষজ দ্রব্য সেবন করে যে যে লক্ষণ সমূহ উৎপাদিত হয় তা পরীক্ষা করেন এবং কোন পীড়ায় সেই সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পাইলে সেই ভেষজ দ্রব্য প্রয়োগ করে রোগীদের রোগ মুক্ত করেন, লক্ষ্য রাখেন এবং পরবর্তীতে ভেষজ দ্রব্যের সাথে ভেষজ বিহীন দ্রব্য স্পিরিট,দুগ্ধ শর্করা,ও পরিস্রুত পানি মিশ্রিত করে আশানুরূপ ফল পান যা আজও প্রচলিত।

এখানে দেখুন- bit.ly/2Mtqgmv


এখানে দেখুন- bit.ly/2LU0xDV

সিঙ্কোণা এক প্রকার লম্বা গাছ যা দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালার পূর্ব অঞ্চলে পেরু, বলিভিয়া, কম্বোডিয়া ভারতবর্ষের নীলগিরি, দার্জিলিং,সিংহল ও জাভা অঞ্চলে জন্মে।

ক্রীয়া ও ব্যবহার- মল ও অন্ত্র প্রনালীতে সিঙ্কোনার ক্রীড়া অধিক। মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য যন্ত্রেও ক্রিয়া করে তবে সেই ক্রিয়া অন্ত্রের ক্রিয়ার গৌণ ফলাফল মাত্র।ক্রিমি, ক্রিমি জনিত উপসর্গ, মুত্রথলির পীড়া, চক্ষু পীড়া, জ্বর-সবিরাম, টাইফয়েড।

এখানে দেখুন- bit.ly/2Zmx6xF

সিঙ্কোণা প্রয়োগে স্বভাব ও গঠন- শিশু অত্যন্ত রুগ্ন, একগুঁয়ে স্বভাবের,আদর পচ্ছন্দ করে না,ঘুমে দাঁত কড়মড় করে, অনবরত নাক ও মলদ্বার খোটে,অন্য শিশুদের কামড়ে দেয়।

বলবান পুরুষ, শ্যামবর্ণ, ঘনকালো চুল এবং যারা পূর্বে বেশ বলবান ছিল পরে শরীরের নানা প্রকার স্রাব নিঃসরণের কারণে ক্রমশই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে তাদের জন্য সিঙ্কোণা, চায়না উপকারী।

হ্যানিম্যান বলেছেন, এই ভাবে শরীরের তরল পদার্থের নিঃসরণ অর্থাৎ রক্ত স্রাব Loss of Blood, অনেক দিন স্তনদান,অধিক লালা নিঃসরণ Salivation, রক্ত মোক্ষম, শ্বেত প্রদর এবং পুরুষের অধিক রেতস্খলণে সিঙ্কোণা উপকারী।
ডাঃ ফ্যারিংটন বলেছেন,পর পর দুই-তিন উপরি উপরি স্বপ্ন দোষ হলে সিঙ্কোণা এবং বহু দিন থেকে স্বপ্ন দোষ বা রেত: নষ্ট হয়ে শরীরের দূর্বলতা বা অন্য পীড়ায় এসিড ফসফরিক উপকারী।

ডাঃ বেয়ার বলেছেন, পিত্ত পাথর বাহির হয়ে গেলে কিছুদিন রোগীকে সিঙ্কোণা খাওয়ালে নতুন করে পুনরায় পিত্ত পাথর জন্মেনা।

মন- দেহ ভগ্ন স্বাস্থ্যের হইলেও রোগীর মনটি বিষন্ন নয়,ফন্দিতে ভরা, রাতে নানা রকম ফন্দির কথা বলে। কল্পনা শক্তি প্রক্ষর নানা ধরনের কল্পনা করে যা মুখেও প্রকাশ করে।

চোখ- চোখ দুটিই আরক্তিম, জ্বালা যুক্ত। মনে হয় চোখে বালু পড়েছে। আলোতে বৃদ্ধি অন্ধকারে উপশম, গরমে উপশম ঠান্ডায় বৃদ্ধি। দৃষ্টি পথে আগুনের ফিনকি, চোখের পাতায় ব্যথা,ভ্রুতে ব্যথা।

কান- 👂 কানের ভিতর বাদ্যযন্ত্র বাজে এমন শব্দ পায়। 👂 কানের বাহিরে ব্যথা, সামান্য স্পর্শে ব্যথা।

নাক-👃 রক্ত শুন্য রোগীর প্রায়ই 👃 নাক থেকে রক্ত পড়ে। সুস্ক-তরল সর্দি লোপে মাথায় যন্ত্রণা। গন্ধে বমি আসে। ফুল, রান্নার গন্ধ ও তামাকের গন্ধ অত্যনুভুতি জন্মে।

দাঁত- দাঁত কালো ও দূর্গন্ধ যুক্ত। জ্বরে আরও বেশি। দাঁত গুলো আলগা হয়ে যায়, মাড়ি ফুলে ওঠে, ব্যথা,চিবাইলে আরাম বোধ।

মুখ- মুখে অনর্গল লালা পড়ে, গন্ধ।

জিহ্বা- জিহ্বা সাদা, হলুদ ময়লা-পরিস্কার।ফুলো ফুলো Flabby মধ্যে হলুদ লেপ, ধার সাদা। তিক্ত স্বাদ।

পেট- ফল গাইলেই অজীর্ণ হয়। অম্লদ্রব্য অসহ্য। পেটে গড়গড় কলকল শব্দ হয়। ঢেকুর উঠিলেও পেট ফোলা ব্যথা কমে না। নিদৃষ্ট ঘন্টায় প্রত্যেহ পেটে বেদনা।

সিঙ্কোণা,চায়নার জ্বর- চায়নার জ্বরের তিনটি লক্ষণ-
শীত।
উত্তাপ।
ঘাম।
চায়নার জ্বর 🌃 রাত্রিতে আসে না জ্বর দিনে আসে যে কোন সময় একদিন অন্তর একদিন বৃদ্ধি। ভোর পাঁচ টা বা বিকাল পাঁচটা।পালা করে আসে পরিবার এক-দুই ঘন্টা এগিয়ে আসে ০৭-১৪ দিন অন্তর অন্তর ত।

জ্বরের পূর্বাবস্থায়- অত্যন্ত পিপাসা, মাথা ব্যাথা।
শীত-একেবারে পিপাসা শুন্য, রোগী অন্তরে ও বাহিরে শীত অনুভব করে। পানি পানে শীতের বৃদ্ধি, শীতের সময় সমস্ত শরীর কাঁপে সেই সাথে প্লীহার ব্যথা,নাক ও ঠোট নীলাভ হয়ে যায় এবং ডরসাল ভারট্রিবীর মধ্যে বেদনা হয়। 
উত্তাপ-উত্তাপাবস্থার সঙ্গে সঙ্গে পিপাসা। উত্তাপে মুখ লাল, ঘনঘন হাচি,হাই উঠে। অত্যন্ত উত্তাপ শরীর যেন পুড়ে যায়।গায়ে কাপড় রাখতে পারে না ফেলে দিলে গা শিরশির করে, অত্যন্ত মাথা থা। উত্তাপের শেষে ঘাম হয়ে জ্বর ছাড়ে। যখন ঘাম আরম্ভ হয় তখন রোগী নিস্তব্ধ থাকে তার পূর্বে ছটফট করে।
ঘাম-ঘামাবস্থায় সঙ্গে পিপাসা থাকে। ঘাম থেকে থেকে হয়। ঘাম হলেই জ্বর ছাড়ে। অনেক ক্ষণ থেকে ঘাম হয়ে তারপর জ্বর ছাড়ে। ঘামে শেষ রাতে বিছানা ভিজে যায়। ঘামের সাথে উদরাময়। ঘাম উত্তাপের শেষ অবস্থায়।
বিজরাবস্থায়- অত্যন্ত ঘাম, পিপাসা হীন, লিভার ও প্লীহার বেদনা।

এখানে দেখুন-

নাড়ি- শীত ও উত্তাপাবস্থায়- দ্রুত, কঠিন, অ-নিয়মিত 
এবং অত্যন্ত ক্ষীণ ও নিতান্তই দূর্বল। 
পিত্ত পাথরী- পিত্ত পাথরীর প্রবল যন্ত্রণার সময় চায়না ৬ষ্ঠ শক্তি প্রতিদিন দুই এক মাত্রা কিছুদিন সেবন আরোগ্য হয়। 
ক্রিয়া স্থিতি- ১৪-২১দিন।
শক্তি- ০-২০০, উচ্চশক্তি।
ক্রিয়া নাশক ও পরবর্তী ঔষধ চিকিৎসক বিবেচ্য।

তথ্যসূত্র- [azadqn@gmail.com]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন