ভাষা-আন্দোলন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষা ও সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ছাত্র-জনতা সর্বস্তরের মানুষ ভাষার জন্য আন্দোলন শুরু করে। যা পরবর্তীতে ব্যাপক রুপ নেয় শাসকশ্রেণী ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিরোধে লাঠিচার্জ এবং পরবর্তীতে একুশ ফেব্রুয়ারীতে ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর বেপরোয়া গুলি করে। গুলিতে বেশ কিছু মানুষ আহত-নিহত হয় এবং আন্দোলন আরো ব্যাপক আকার ধারন করে শাসকশ্রেণী আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার দাবি মেনে নেন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করেন।
সে পটভূমিতে আব্দুল গাফফার চৌধুরী গানটি লিখেন এবং ভাষা আন্দোলনের লিফলেটে এই গানটি "একুশের গান" শিরোনামে প্রকাশিত হয় পরবর্তীতে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত"একুশে ফেব্রুয়ারি" সঙ্কলনে একুশের গান প্রথম ছাপা হয়।
"একুশের গান"
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।।
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখিরা
শিশু-হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তি লগনে তবু তোরা পার পাবি?
না,না,না,না খুন-রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
সেদিনও এমনি নীল গগণের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকানন্দা যেন,
এমন সময় ঝড় এলো এক,ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।
সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের,ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর-ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভাইয়ের আত্মা ডাকে
জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাঁকে
দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালব ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী কথাশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরষ্কারসহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করেন। ডানপিটে শওকত, আঁধার কুঠির ছেলেটি তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থ।
তথ্যসূত্র- azadqn@gmail.com
"একুশের গান"
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।।
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখিরা
শিশু-হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তি লগনে তবু তোরা পার পাবি?
না,না,না,না খুন-রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
সেদিনও এমনি নীল গগণের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকানন্দা যেন,
এমন সময় ঝড় এলো এক,ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।
সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের,ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই বাংলার বুকে
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র শান্তি নিয়েছে কাড়ি
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর-ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভাইয়ের আত্মা ডাকে
জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাঁকে
দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালব ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি, একুশে ফেব্রুয়ারি।।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী কথাশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরষ্কারসহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করেন। ডানপিটে শওকত, আঁধার কুঠির ছেলেটি তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য শিশুতোষ গ্রন্থ।
তথ্যসূত্র- azadqn@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন