RH

১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

Antimonium Tartaricum

এন্টিমোনিয়াম রোগীর বিষয় পাঠ করতে গেলে চিকিৎসক যে জিনিসটি সর্বপ্রথম দেখেন তা রোগীর মুখ মন্ডলে প্রকাশিত হয়। মুখ বিবর্ণ ও রুগ্ন দেখায়, নাটকটি আকৃষ্ট ও কুঞ্চিত থাকে, চোখ বসে যায় এবং চোখের চারিদিকে কৃষ্ণ মন্ডল দেখা দেয়। ওষ্ঠদ্বয় বিবর্ণ ও কুঞ্চিত হয়। নাসারন্ধ্র প্রসারিত, নাকের ধার ওঠা-নামা করে এবং নাকের মধ্যে ঝুল জমার মতো দেখায়। মুখ মন্ডল ঠান্ডা ঘামে আবৃত, ঠান্ডা বিবর্ণ এবং মুখ মন্ডলের চেহারা যন্ত্রণা যুক্ত ও মুখের মাংস পেশীর স্পন্দন।
এন্টিমোনিয়াম টার্টারিকাম, এন্টিমনি ও পটাস সংযোগে প্রস্তূত হয়। রক্ত সঞ্চালনের স্বল্পতা সাধন করতে এন্টিমনি ও পটাসের ক্রিয়া সমধিক।
মনোলক্ষণ-  শিশু রোগীর মেজাজ খিটখিটে,নাড়ী দেখতে দেয়না, সবসময় কোলে চড়ে থাকে,ছুইলে কাঁদে, পরিচিত জনেরা কাছে গেলে জড়িয়ে ধরে, দুধ খেতে চায় না, খাওয়ার পর কাসি, দাঁত উঠার সময় কাসি, নবজাতকের জন্ডিস, শ্বাস শুন্যতা,খাবি খাওয়া, জন্মানোর সময় মনে হয় শ্বাস প্রশ্বাস নাই। বুকে অত্যন্ত সর্দি বুক ও গলার ভিতর সাঁই সাঁই ঘড়ঘড় শব্দ, কাশতে কাশতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে,গয়ার তুলতে পারে না, সবুজ বর্ণের মল,আমযুক্ত মাতৃদুগ্ধ পানে।
ডাঃ লিলিয়েন্থেল বলেছেন, এন্টিম টার্ট নিম্নশক্তি ঘনঘন প্রয়োগ করে যদি উপকার না হয় ও শিশুর মুখ মন্ডল নীল বর্ণ দেখা যায় তবে-ওপিয়াম, মুখ ম্লান ও ফ্যাকাসে দেখালে-চায়না, এবং জীবিতের চিহৃ দেখা মাত্র-একোনাইট। নবজাতকের।
ডাঃ গ্রভোগল বলেছেন, এন্টিমটার্ট অলস ও শ্লেষ্মা প্রধান ধাতু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পক্ষে ফলপ্রদ।
জিহ্বা- পাতলা সাদা ক্লেদে আচ্ছাদিত, সেই সাথে লাল কিনারা।
নাড়ী- নাড়ীর গতি অত্যন্ত দ্রুত থাকে। ঘর্মাবস্থায় অত্যন্ত দূর্বল-পাওয়া যায় না।
জ্বর- সবিরাম জ্বর,একদিন যে সময় আসে পর দিন তার ২-৪ ঘন্টা পূর্বে আসে। জ্বর আসার সময় সকাল ০৯টা বিকাল ০৩টা। জ্বর আসার পূর্বে শীত করে কিন্তু কাঁপুনি থাকে না। মাথায় ঘাম,বমি বমি ভাব ও ঘুম ঘুম ভাব এন্টিম টার্টের পরিচায়ক লক্ষণ।
বমি-সবুজ ও নীলাভ বমন। বমনের পর দূর্বল অবসন্ন,নাড়ী ক্ষীণ ও তন্দ্রা ছন্ন। ঠান্ডা পানির পিপাসা, কপালে ঘাম,ওয়াক তোলা,টকদ্রব্য ও আপেল খাওয়ার ইচ্ছা, ঢেকুর,ঢেকুরে পঁচা গন্ধ, ডানপাশে (দক্ষিণ) শুয়ে থাকলে বমি কম হয়। খাদ্যে বিতৃষ্ণা।
ডাঃ নাশ - কলেরার যেখানেই তিনি বামনের পর বমনেচ্ছা নিবৃত্তি লক্ষ্য করেছেন সেখানেই এন্টিম টার্ট সেবন করিয়ে বহু রোগীর প্রাণ রক্ষা হয়েছে।
ঘুম-সকল রোগে অতিশয় নিদ্রালুতা। নিদ্রা যাইবার দূনির্বার প্রবৃত্তি ইচ্ছা,নক্স-ম,ওপি।
চর্ম- গালের উপর উদ্ভেদ এবং উদ্ভদের মধ্য স্থলে গর্ত থাকলে এন্টিম টার্টে উপকার হয়।
চোখ- চক্ষু দ্বয় উদিত এবং উজ্জ্বল, অপরিচ্ছন্ন ও পানিতে ভাসমান এবং ব্যথা।
দাঁত- দাঁত গুলোতে বাতজ ব্যথা, স্পর্শ কাতর এবং শ্লেষ্মায় আবৃত।
পেট- বমি বমি ভাব দেখা দেয়, পরিপাকের অক্ষমতা এবং খাদ্যে বিতৃষ্ণা। তলপেটে চাপ বোধ সম্মুখ দিকে ঝুঁকলে।
প্রস্রাব- প্রস্রাবের সময়ে এবং পরে মুত্র নালীর মধ্যে জ্বালা, রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব, প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি, মুত্র নালী ও অন্ড কোষ প্রদাহ।
স্ত্রী রোগ- জরায়ু শিথিল হয়ে পড়ে, থেকে থেকে প্রদর স্রাব,স্রাব পানির মতো।
শ্বাস কষ্ট- ডাঃ কেন্ট এন্টিম টার্টের আলোচনায় শ্লেষ্মা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। শ্বাস রোধ, বায়ু নালীতে শ্লেস্মার সঞ্জয়, ফুসফুসের পক্ষাঘাত সম্ভাবনা, বিশেষ করে ডান ফুসফুসের প্রদাহ সহকারে পান্ডু রোগ। স্বরযন্ত্র অথবা কন্ঠ নালীতে শৈলাবস্থান,আধিভৌতিক কারণে তন্দ্রালুতা ও অচৈতন্য সহকারে দৃশ্য মান মৃত্যু,ঘুমাইলে শ্বাস কষ্টের বৃদ্ধি।
মাথা ব্যথা-  মাথা ও কপাল গরম, ঘোরে চোখ বন্ধ করলে মাথা ঘোরে টলমল করে ঘুমানোর ইচ্ছা। মাথা ও কপাল যেন দড়ি দিয়ে বাঁধা।
বৃদ্ধি- শীতল জলীয় বায়ুতে, ঋতু পরিবর্তনের সময় বর্ষা,শরৎ, বসন্ত। সন্ধ্যায়, তিন টায়, ঠান্ডা লাগার পর,গরম ঘরে বসলে, দুধ খাইলে।
হ্রাস- সোজা হয়ে বসলে, ঢেকুর উঠলে, গয়ার উঠলে,নির্মল বায়ুতে,ডান পাশে শয়নে।
ক্রিয়ানাশক- চায়না, এসাফিটিডা, ককু, রাসটক্স, কোনায়াম ।
পরবর্তী ঔষধ-  সিনা,ইপিকাক,পালস, কার্ব্বোভেজ।
সাদৃশ্য ঔষধ- এন্টিম টার্ট লাইকোপোডিয়ামের সমগুন।
কিন্তু লাইকোপোডিয়ামের নাসা পার্শ্বের আক্ষেপিক সঞ্চালনের পরিবর্তে এন্টিম টার্টের নাসা বন্ধের প্রসারণ লক্ষিত হয়। ভিরেন্টমের সমগুন উভয় ঔষধেই অতিসার উদর বেদনা,শরীরের শীতলতা ও অল্ম দ্রব্যে স্পৃহা লক্ষণ আছে।ইপিকাকের সমগুন কিন্তূ এন্টিম টার্টে শ্বাস ক্রিয়ার ত্রুটি বশতঃ অধিকতর নিদ্রালুতা এবং বমনান্তে বিবর্মিয়ার উপশম জন্মে। যখন ফুসফুসের ক্রিয়া লোপ হয়ে আসছে বোধ হয় রোগী নিদ্রা গ্রস্থ হয়ে পড়ে কালের হ্রাস বা নিবৃত্তি জন্মে তখন ইপিকাকের স্থলে এন্টিম টার্ট ব্যবহৃত হয়। স্বরযন্ত্রে বা কন্ঠ নালীতে শৈল্যের foreign bodies অবস্থিতি বশতঃ শ্বাস কৃচ্ছে dyspnoea সিলিসিয়ার পূর্বে,প্রমেহের স্রাব লোপে পালসেটিলার পূর্বে, স্যাঁতস্যাঁতে ভিত্তির দোষে রোগ জন্মিলে টেরিবিন্থের পূর্বে এন্টিম টার্ট ব্যবহৃত হয়।
ক্রিয়া স্থিতি ২০-৩০দিন।
ষষ্ঠ সংস্করণ-
Knowledge of medicine 105-114
Prover of medicines- 126-142
Mode of administration of medicine245-251
Only one, single, simple medicine should be given to patient at one time-272-274
Strong of the doses for the homeopathic use how it may be increased to diminished, danger of too large doses, observation of patient-275-283
সহযোগী বই-
১) অর্গানন অব মেডিসিন- স্যামুয়েল হ্যানিম্যান।
২) পকেট ম্যানুয়াল অব হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা এন্ড রেপার্টরি- ডাঃ  বোরিক।
৩) হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা- ডাঃ জেমস টেইলার কেন্ট।
৪) কম্পারেটিভ মেটেরিয়া মেডিকা- ডাঃ নারায়ন চন্দ্র ঘোষ।
৫) তুলনা মূলক মেটেরিয়াল মেডিকা- ড.অমিতাভ ভট্টাচার্য।
৬) মেটেরিয়ামেডিকা ও থেরাপিউটিক্স-অতুল কৃষ্ণ দত্ত।

হোমিওপ্যাথিক ঔষধ চিকিৎসকের পরামর্শে সেব্য, হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ক্রিয়া নাশক ও পরবর্তী ঔষধ রয়েছে।
ইমেইল-azadqn@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন