RH

০৬ আগস্ট ২০২০

৩৪২৪৪

      বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম "দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে"

সালাতের জন্য আমরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করি। মসজিদে মুয়াজ্জিনের আযান শুনে জামাতে দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, যানবাহনে এবং অনেক সময় ইশারা ইঙ্গিতে ও শুধুমাত্র সালাতে পঠিতব্য প্রার্থনা সমুহে তা সম্পূর্ণ করি এ হচ্ছে ফরয এরপর আছে সূন্নত ও নফল এবং রাতের সালাত যার কোনটিই বাদ দেওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায় না।

সালাতে আমরা কি করি/পড়ি

০১) সংকল্প- সালাত আদায় করবো, জামাতে- একাকী।

০২) সালাত কোথায় আদায় করবো- মসজিদে- বাড়িতে।

০৩) অজূ- তায়াম্মূম।

০৪) ইক্বামত।

০৫) নির্ধারিত স্থানে কিবলা মুখি হয়ে দাঁড়িয়ে "তাকবীরে তাহরীমা" আল্লাহ আকবার বলে সালাত শুরু করতে হয়  দুই হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে।

০৬) বুকের উপর হাত বাঁধতে হয়।

০৭) সানা পড়তে হয়।

মূসা ইবন ইসমায়ীল (র)  আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা ও কিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার মাতাপিতা আপনার উপর কোরবান হোক, তাকবীর ও কিরআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কী পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেন: এ সময় আমি বলি- ইয়া আল্লাহ ! আপনি মাশরিক ও মাগরিবের মধ্যে যেরুপ দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন, আমার ও আমার ত্রুটি-বিচ্যুতির মধ্যে ঠিক তদ্রুপ দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন। ইয়া আল্লাহ শুভ্র বস্তূকে যেরুপ নির্মল করা হয় আমাকেও সেরুপ পাক- সাফ করুন। আমার অপরাধ সমূহ পানি,বরফ ও হিমশিলা দ্বারা বিধৌত করে দিন- বুখারী হাদীস, ইফা।

আরবী উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা বা'ইদ বাইনী ওয়া বাইনা খাত্ব ইয়া ইয়া কামা বা'আদতা বাইনাল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিব। আল্লাহুম্মা নাক্বক্বিনী মিনাল খাত্ব ইয়া, কামা ইয়ূনাক্বকাছ ছাওবূল আব্ইয়াযু মিনাদ দানাস। আল্লাহুম্মাগসিল খাত্ব ইয়া ইয়া বিলমায়ি ওয়াছ ছালজি ওয়াল বারাদ।

বাংলা উচ্চারণ- হে আল্লাহ! আমার ও আমার পাপ সমূহের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে দাও, যেরুপ তুমি দূরত্ব সৃষ্টি করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপ সমূহ হতে পরিচ্ছন্ন কর, যেরুপ পরিচ্ছন্ন করা হয় ময়লা থেকে সাদা কাপড়কে। হে আল্লাহ! তুমি আমার পাপ সমূহ ধুয়ে ফেল পানি,বরফ ও শিশির দ্বারা।

০৮) আঊযুবিল্লা হিমিনাশ শায়ত্বানির রজীম- আমি বিতাড়িত শয়তান হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম- পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে ( শুরু করছি)।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম সহ সূরা ফাতিহা সকলের জন্য (বারবার পঠিতব্য সাত আয়াত)। ইমাম উচ্চস্বরে "আমীন" বলার সাথে সাথে "আমীন" বলতে হয়। একাকী সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে অন্য সূরা বা আয়াতাংশ মিলিয়ে পড়তে হয়। 

সূরা ফাতিহা (মক্কী, রুকু ০১)-

০১)আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন।

০২) আর রহমানির রহীম। 

০৩) মালিকি ইয়াওমিদ্দিন। 

০৪)ইইয়াকানাবুদু ওয়া ইইয়াকানাস্তাইন। 

০৫) ইহদিনাছ ছিরাত্বাল মুস্তাক্বীম।

০৬) ছিরাত্বাল্লাযীনা আন'আমতা আলাইহিম। 

০৭) গায়রিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায যোয়াল্লীন। আমীন।

বাংলা উচ্চারণ- 

০১)সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি সারা জাহানের পালনকর্তা। 

০২)যিনি পরম করুণাময় পরম দয়ালু।

০৩)যিনি বিচার দিনের মালিক।

০৪) আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। 

০৫)দেখাও আমাদের সরল- সোজা পথ। 

০৬) সে লোকদের পথ যাদের তুমি অনুগ্রহ করেছ।

০৭) তাদের পথ নয় যাদের উপর তোমার গজব পড়েছে এবং তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। আমীন।

সূরা নাছর ১১০( মাদানী,রুকু০১) 

আরবী উচ্চারণ- 

০১) ইযা জ্বাআ নাছরুল্লাহি অলফাতহু। 

০২) অরাআইতান নাছা ইয়াদখুলুনা ফী দীনিল্লাহি অফওয়াজ্বা। 

০৩) ফাছাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াছতাগফিরহু; ইন্নাহু কানা তাওয়্যাবা।

বাংলা উচ্চারণ- 

০১)যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে,

০২) এবং আপনি লোকদের দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন,

০৩) তখন আপনি রব্বের সপ্রশংস পবিত্রতা- মহিমা বর্ণনা করতে থাকুন এবং তার সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন। বস্তূত: তিনি তো অতিশয় তওবা কবুলকারী।

০৯) ক্বিরাআত শেষে রুকুতে যাওয়ার আগে আল্লাহ আকবার বলে 'রাফ'উল ইয়াদায়েন করে দুই হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে রুকুতে যেতে হয় এবং রুকুতে পাঠ করতে হয় 

আরবী উচ্চারণ- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলী।

বাংলা উচ্চারণ- হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ! তোমার প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা বর্ণনা করছি। হে আল্লাহ আমাকে তুমি মাফ করে দাও।

১০) রুকু থেকে উঠে স্থিরভাবে সোজা হয়ে দুই হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে ক্বাওমায় বলতে হয়

আরবী উচ্চারণ- সামি'আল্লা-হু লিমান হামিদাহ।

বাংলা উচ্চারণ- আল্লাহ তার কথা শোনেন, যে তার প্রশংসা করে। 

এরপর বলতে হয় 

আরবী উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ।

বাংলা উচ্চারণ- হে আল্লাহ যাবতীয় প্রশংসা একমাত্র তোমারই।

আরবী উচ্চারণ- রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, হামদান কাছীরান তাইয়েবাম মুবারাকান ফীহি।

বাংলা উচ্চারণ- হে আল্লাহ! তোমারই জন্য অগনিত প্রশংসা,যা পবিত্র ও বরকতময়। 

১১) ক্বাওমার দো'আ পাঠ শেষে "আল্লাহ আকবার" বলে সিজদায় যেতে হয়। বলা হয়েছে সাত অঙ্গে সিজদা। সিজদায় পাঠ করতে হয়

আরবী উচ্চারণ- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলী।

বাংলা উচ্চারণ- হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ! তোমার প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা বর্ণনা করছি। হে আল্লাহ আমাকে তুমি মাফ করে দাও। 

প্রথম সিজদায় সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলী। পাঠ শেষে "আল্লাহ আকবার" বলে সিজদা থেকে উঠে স্থির ভাবে বসে দুই সিজদার মাঝে বলতে হয়-

আরবী উচ্চারণ- আল্লাহুম্মাগ ফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াহদিনী ওয়া আফিনী ওয়ারঝুকনী।

বাংলা উচ্চারণ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মাফ কর, আমায় রহম কর, আমাকে হেদায়েত দান কর,আমায় শান্তি দান কর এবং আমাকে রিযিক দাও।

দিতীয় সিজদায় অনুরূপ সিজদার দো'আ "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলী" পাঠ শেষে "আল্লাহ আকবার" বলে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠে দাঁড়িয়ে সূরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা বা আয়াতাংশ মিলিয়ে পড়ে রুকু ও সিজদার দো'আ সমুহ পাঠ শেষে আল্লাহ আকবার বলে সিজদা থেকে উঠে স্থিরভাবে বসে দুই রাকাত সালাতের শেষ বৈঠকে "তাশাহহুদ" এ আত্তাহিইয়াতু, দরুদ, দো'আয়ে মাছুরাহ ও অন্য দো'আ পড়তে হয়।

➡️ আত্তাহ্হিয়াতূ

➡️ দরুদ



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন