RH

০৭ আগস্ট ২০১৯

ওয়াকফ।

Wakf.
ওয়াকফ বলতে সাধারণত কোন মুসলমান কর্তৃক ধর্মীয় কাজের উদ্দেশ্যে তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি চিরস্থায়ী ভাবে উৎসর্গ করে নিজের স্বত্বের বিলাপ সাধন করা বুঝায়। যিনি এভাবে ওয়াকফ করেন তাকে ওয়াকিফ বলে।

১৯১৩ খৃষ্টাব্দের মুসলমান ভ্যালিডেটিং এ্যাক্ট (১৯৩০,১৯৩৪) ও ১৯৬২ খৃষ্টাব্দের ওয়াকফ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ওয়াকফ বলতে ধর্মীয় ও দাতব্য উদ্দেশ্যে ইসলাম ধর্ম পালন কারী কোন ব্যক্তি কর্তৃক স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি স্থায়ী ভাবে উৎসর্গ করণ বুঝায়।

ইমাম আবু হানিফার মতে, ওয়াকফ এর অর্থ হলো, কোন নির্দিষ্ট বস্তুতে ওয়াকিফের মালিকানা আটক করে তার আয় দরিদ্রদের জন্য দান করা বা অপর কোন নেক উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা।

ওয়াকফ দু-রকমের হতে পারে:
সর্বসাধারণের মঙ্গলের জন্য বা ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে যে ওয়াকফ করা তাকে সর্বসাধারণের ওয়াকফ বলে।
যেমন- মসজিদ নির্মাণ, ইমাম বাড়া, মাদ্রাসা নির্মাণ ইত্যাদি।

ওয়াকফির পরিবার এবং বংশধরদের জন্য যে ওয়াকফ করা হয় তাকে ব্যক্তিগত ওয়াকফ বলে।
যেমন- ওয়াকফির সন্তান-সন্ততি বা বংশধরদের বা নিজের ভরন-পোষণ বা লেখা পড়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত ওয়াকফ কে ব্যক্তিগত ওয়াকফ বলে।

বিভিন্ন শ্রেণীর ওয়াকফ সৃষ্টির কোন নির্ধারিত নিয়ম নেই। ওয়াকফ সৃষ্টির জন্য সুস্পষ্ট অভিপ্রায়,সে মর্মে মুতাওয়াল্লী নিয়োগ প্রয়োজন। আদালত এই মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন যে, কোন ওয়াকফ দলিল স্বয়ং উত্তম পথ নির্দেশক। পি,এল,ডি ১৯৬৪ ঢাকা ৫৭৫। কোন ওয়াকিফের প্রাথমিক অভিপ্রায় বিবেচনা করে নির্ধারণ করতে হবে।

বৈধ ওয়াকফ সৃষ্টির জন্য শর্তসমূহ:
১) বৈধ উদ্দেশ্য- ওয়াকফের উদ্দেশ্যে  ইসলামী আইন অনুসারে স্বীকৃত হতে হবে।
২) স্থায়ী উদ্দেশ্য- ওয়াকফের উদ্দেশ্য স্থায়ী হতে হবে। মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণ।
৩) নিদ্দিষ্টতা- ওয়াকফের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট হতে হবে। কোন রুপ অনিশ্চয়তা বা অনির্দিষ্টতা ওয়াকফ টিকে বাতিল করে দিবে।
৪) সম্পত্তিটি ওয়াকিফের হতে হবে। যে সম্পত্তি ওয়াকফ করা হবে তা ওয়াকিফের মালিকানাধীন হতে হবে। সম্পত্তির মালিক ছাড়া অন্য কেউ ওয়াকফ করতে পারে না। মুশা সম্পত্তিতেও ওয়াকফ করা যায়।
৫) ওয়াকিফের যোগ্যতা থাকতে হবে। ওয়াকিফকে অবশ্যই সাবালক হতে হবে।
৬) ওয়াকফ সকল প্রকার শর্ত মুক্ত হতে হবে। শর্তাধীন ওয়াকফ বৈধ বলে গণ্য হবে না।
৭) ওয়াকফ কৃত সম্পত্তি ওয়াকিফ কর্তৃক রেজিষ্ট্রি কৃত হতে হবে।

মুতাওয়াল্লী- মুসলিম আইন অনুসারে যে সময়ে ওয়াকফ সৃষ্টি করা হয় সে সময় হতে ঐ সম্পত্তির সকল স্বত্বাধিকার ওয়াকিফের নিকট হতে আল্লাহ তাআলার উপর ন্যস্ত হয়। কিন্তু সম্পত্তি দেখা-শোনা ও তত্ত্বাবধান করার জন্য এক ব্যক্তি নিয়োগ করা হয় যাকে বলা হয় মুতাওয়াল্লী। ওয়াকফ সম্পত্তিতে মুতাওয়াল্লীর নিজস্ব কোন স্বত্বাধিকার থাকে না।
---
দিনাজপুর আইন কলেজে অধ্যায়ন কালের আইনের  বই থেকে নেওয়া।
ইদানিং পত্রিকা পাঠে জানা যাচ্ছে দেশে-বিদেশে অনেকেই চিন্তিত তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এবং অনেকেই চাচ্ছে তাদের অর্জিত ধন-সম্পত্তি সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য।

তথ্যসূত্র - [azadqn@gmail.com].


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন