RH

০৬ জানুয়ারী ২০২০

পান ও সুপারি

আলহামদুলিল্লাহ! পছন্দ হয়েছে এ দিন তারিখ ঠিক করার ঘটনা,সব ঘটকের মধ্যস্থতায় পাত্র পক্ষ পাত্রী দেখতে গেলে মেহমান আপ্যায়ন সম্পন্ন হলে তারপর আসে একটি মুহূর্ত মুরুব্বিজন গনের সঙ্গে যদি পাত্র বাবাজি আসেন তবে পাত্রের মন তখন দুরুদুরু কাঁপে কখনো লাজুক কখনো অস্থির পাত্র বাবাজি মেয়ে দেখতে এসেছেন যারা পারিবারিক ভাবে ঘটেকের মাধ্যমে বিয়ে শাদি করেছেন তারা এ অবস্থা জানেন আমাকে বহু বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে যেতে হয়েছে।
কথা হচ্ছে পান নিয়ে পান একপ্রকার লতানো গাছের পাতা যা, মৃগনাভী কস্তরী, কালোজিরা, চুন,সুপারি ইত্যাদি সহযোগে খাওয়া হয়।
তাম্বুল-পান লতানো গাছ বাড়ীর আশে পাশে সুপারির গাছে/অন্যগাছের পাশে রোপণ করলে সহযোগী গাছ টিতে আলগা শিকরে জড়িয়ে ধরে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে অগুনিত শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পুরো গাছটা মুড়িয়ে অসংখ্য পাতা হাওয়ায় নাড়িয়ে কিছু সময় নিয়ে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।
বরজ- পান জন্মানোর আচ্ছাদিত ও সুবিন্যস্ত ক্ষেত, ছাউনি দেওয়া ও ঘেরাও করা পানের ক্ষেত। এ বানিজ্যিক ভাবে পান চাষের জন্য।
পান পাতার বাজার অনেক পুরনো পঞ্চগড়ে পানের আবাদ হয় এ জেলার বিভিন্ন জায়গায়। টুনির হাট,হাড়িভাসা,জগদল, কালিয়াগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে। পঞ্চগড়ের বাঁশ বেশ উন্নত জাতের এবং সহজ লভ্য ও সস্তা হওয়ায় বরজ তৈরির সরঞ্জাম ট্রাকে ট্রাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। অসংখ্য পানের দোকান পঞ্চগড়ে এসব দোকান ও দেশের বিভিন্ন স্থানে পান সরবরাহের জন্য পানের আড়ৎ পঞ্চগড়ে।
পান পাতা ঔষধি গুণ সম্পন্ন। পান পাতা চাবালে একটু ঝাল/ঝাঁজ লাগে জিহ্বা,মুখ ও ঠোঁট লাল হয়।
বলা হয়েছে, কালোজিরা সর্ব রোগের ঔষধ। কালো জিরা সহ পান খাওয়ার বেশ উপকারিতা রয়েছে। এ পান রাতে খাওয়া ভালো।
পান
পান পাতা

সুপারি-মানুষই খায়, খাইতে হয় না খেলে কেমন যেন লাগে, দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাবার দীর্ঘ সময় মুখে থাকার কারণে গন্ধও ছড়ায়।
সুপারি-আমাদের পঞ্চগড় জেলায় সুপারি গাছ নাই এমন বাড়ি খুব কমই আছে শহরে বা গ্রামে। সুপারি গাছ বৈদ্যুতিক খাম্বার মত লম্বা ৩০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত উঁচু গোলাকার কান্ডের ব্যাস ৪-৮ ইঞ্চি। ডাল নেই তবে পাতা আছে সেই পাতার মাঝখানে একটি আবার ডান্টি আছে দেখতে অনেকটা ডাব গাছের মতো তবে নরম শুকিয়ে ঝরে পড়ে যায় আর সুপারি গাছের গায়ে একটা গোলাকার দাগ রেখে আরো একটু বৃদ্ধি হয় এভাবে ৫-৮ ইঞ্চি মাপের গোলাকার দাগ প্রত্যেক সুপারি গাছে থাকে। পাঁচ থেকে সাত বছরে ফল ধরে বেঁচে থাকে অনেক দিন লম্বা হয় তাই হাওয়ায় বা বাতাসে ভেঙ্গেও পড়ে মাথা ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকে তারপর ভিতর টা পানি জমে পচে তবে বাইরের টা ঠিক থাকে। ফুল থেকে ফল হতে বেশ সময় নেয় বর্ষার প্রথম বৃষ্টির পর সাধারণত এ এলাকায় সুপারি পারে যখন সবুজ থেকে হলুদ রঙের হয় তখন।
সুপারির ধরন-০১. কাঁচা। 
                     ০২.পাকা। 
                     ০৩.মজা। 
                     ০৪. শুকনা সুপারি। 
                     ০৫.কেটে ফেলা গাছ। 
                     ০৬. সুপারির খোল।
বিক্রয় পদ্ধতি- কাঁচা ও মজা ০৪টি এক হালি,২০হালি এক পন,১৬পন এক কাহন। সুকনা সুপারি কিলোগ্রাম হিসেবে বিক্রয় হয়।
সুপারি খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে কম করে খেতে হয় এতে মাদকতা আছে কাঁচা সুপারি চার্জিং শরীর ঘামিয়ে দেয় দেহ ভিজে যায় তার পরও অনেক পান-সুপারি খাওয়া ছাড়ে না। পান, সুপারি,চুন,জর্দা খেয়ে মুখ লাল করে দেখতে অবশ্য ভালোই লাগে। গান, সিনেমা,গদ্য-পদ্য সবিই আছে পান আর সুপারি নিয়ে। আছে চিকিৎসক গনের মতামতও। কাঁচা সুপারির খুব ধার প্রথম প্রথম মুখের ভিতরের গাল-জিহবা কাটে আর এইজন্যই তো মজা এ আবার অন্য রকম অদ্ভুত পদ্ধতি,আগে মাটিতে কুয়া/কুয়ো খুড়ে বিভিন্ন রকমের গাছ-গাছরা কাঁচা-পাকা সুপারির সঙ্গে দিয়ে কিছু দিন ঢাকা দিয়ে রাখতো যাকে বলে পুঁতে রাখা। কেহ আবার মাটির হাড়িতে রাখে। এখন অবশ্য পুতে রাখা পদ্ধতি বদলেছে এখন খালে রাখে খোলা আকাশের নীচে পাট যেভাবে রাখে একটু গন্ধ বের হয় মজা খাওয়ার জন্য সুপারির পুকুরের।
কাঁচা সুপারি
সুপারি

তথ্যসূত্র- [azadqn@gmail.com]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন